সুস্থ সমকামিতা

গত পরশুর কথা । আমার অনেক কাছের একজন ফেসবুক বন্ধু ফোন দিল আমায় ।

আমি ফোন ধরে বললাম, হ্যালো । কি খবর তোমার , হিমু ?

আমি হা হা হা করে হাসলাম । বললাম, তুমিত জানই ভাই । আমি একটু পাগলা কিসিমের লোক । মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে ফোন ধরি না ।

ও হাসল, আমি জানি রে ভাই । তবে আমাগো কথা একটু স্মরণ রাইখেন । নাহলে ছোটো ভাই রা কার সাথে পরামর্শ করব !

আমি বললাম, তোমার আবার কি হইল হিমু ?

হিমু বলল, ভাই আর কইয়েন না । গত এক মাসে আমার উপর দিয়া ঝড় গেসে একটা বড়সড় ।

আমি বললাম, তোমার মত ঝানু পাবলিকের সাথে ঝড় ? ব্যপার টা কি ? খুইল্লা কও ?

হিমু বলল, ভাই শেষ পর্যন্ত ফোনটা ধরলেন আপনি ! আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না ।

হিমু হালকা গলা কাশি দেয় । বলে, ভাই । মিরপুরের এক মডেল পোলার কথা কইছিলাম আপনারে । মনে আসে ?

আমি বললাম, কন পোলা রে ভাই ! আমারে কতজন তাদের গল্প বলে যে আমার মনে থাকে না ।

হিমু একটু বিরক্ত হয়ে বলল, ভাই । ওই যে হাবিব নামে যে ছেলেটা ( ছদ্মনাম )

আমি বললাম, ও । যার সাথে তোমার খুব ভালো বন্ধুত্ব চলছিল ?

হিমু বলল, জি ভাই । তার সাথে এক মাস আগে মিট করছি ।

আমি হাসলাম । বললাম, ভালই মজা করলা ?

হিমু হাসে না । বলে , ভাই । হাবিব রে আমার ভালো লাগত । ওর সাথে দেখার পর আরও ভালো লাগসে ।

পোলা ডা অনেক স্মার্ট । সুন্দর । ওর সাথে ওর বাসায় যাই ।

আমি বললাম, হের পরে কি করলা মিয়া । হেই ডা কও ।

হিমু লজ্জা পায় । বলে, ভাই । যা করার তাই করছি ।

আমি বললাম, সাবাস বেটা । তাহলেত ভালই হল । কিন্তু প্রবলেম কি ?

হিমু বলে, ভাই । হাবিবের সাথে এনাল করার পর আমি বেপক মজা পাইসি ।

ও সেক্স কি জিনিস সেইটা খুব ভালো মতই জানে ।

আমি বললাম, তারপর কি হল ।

হিমু বলে, ভাই । তারপর বাসায় যাই । দুইদিন বেশ ভালই ছিলাম । কিন্তু তৃতীয় দিন থেকে প্রবলেম শুরু হয় ।

আমি বললাম, কি প্রবলেম ।

হিমু বলে, ভাই । কি কমু । লজ্জার কথা । আমি তৃতীয় দিন বাসায় ঘুম থেকে উঠে
বাথরুমে যাই পেশাব করতে । যেই পেশাব করা শুরু করছি দেখি আমার পেনিসের ভেতর
মরিচের মত জ্বলছে ।

আমি বললাম, মাই গড ।

হিমু বলে, ভাই । সে যে কি যন্ত্রণার ! বলে বুঝাতে পারব না । তার উপর খেয়াল করলাম পেশাবের সাথে সাদা সাদা পুঁজের মত কি যেন যাচ্ছে !

আমি বললাম, এসব কি বলতাস ?

হিমু বলে, যা বলতাসি সব সত্যি ভাই । আমি বাথরুম থেকে এসে টেনশনে পড়ে যাই ।
বিকেল নাগাদ যন্ত্রণা আরও বেড়ে গেল । সাথে শুরু হল পুঁজ পড়া ।

আমি বললাম, ও গড । তারপর কি করছ ?

হিমু বলল, ভাই। সেদিন রাতেই ডাক্তারের কাসে যাই । ডাক্তার আমাকে কিছু টেস্ট করতে দেয় ।

ডাক্তার আমাকে জিজ্ঞেস করে যে আমি কোন প্রসটিটিউটের সাথে সেক্স করছি না ।

আমি বললাম, এরপর কি হল ?

হিমু বলে , আমি ডাক্তারের কাছে বললাম একটা মেয়ের সাথে সেক্স করেছি ।
ডাক্তার আমায় জিজ্ঞেস করে আমি কোন কনডম ব্যবহার করেছি কি না । আমি
ডাক্তারকে বলি যে আমি কোন কনডম ব্যবহার করিনি ।

আমি বললাম, তারপর কি হল?

হিমু বলে, ‘‘পরদিন আমি টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই । ডাক্তার
আমাকে বলে আমার গনোরিয়া হয়েছে । এটা এখন আমার শরীরে প্রাথমিক অবস্থায় আছে ।
ডাক্তার আমাকে জানায় আমি ৪-৫ দিন আগে নিশ্চিত গনোরিয়া আছে এমন কারো সাথে
সেক্স করেছি । আমি চুপ করে থাকি । ডাক্তার আমাকে বলে,আপনি কনডম ব্যবহার না
করার কারণে এমন হয়াছে ।’’

আমি হিমু কে বললাম, বল কি ? হাবিবের তাহলে গনোরিয়া আছে ?

হিমু বলল, জি ভাই । ডাক্তার তাইই বলল । ডাক্তার আমাকে কিছু এন্টিবায়োটিক দিল । পরদিন থেকে টানা ১০ টা ইনজেকশন চলল ।

আমি বললাম, হায় হায় । কও কি ? এতো ঘটনা ঘইটা গেসে এটা আমি জানলাম না ।

হিমু বলে, ভাই । আমার পরিবারের সবাই জেনে গেসে যে আমি গোপনে মাগি পাড়ায় যাই ।

আমি হা হা করে হেসে দিলাম। বললাম, তোমার শরীরের এখন কি অবস্থা !

হিমু বলল, আপনাদের দোয়াতে এখন সুস্থ ।

আমি বললাম, অল্পের উপর দিয়া গেল মিয়া । সুন্দর পোলা দেখলেত হুঁশ থাকে না। এখন শিক্ষা হইল তোমার ।

হিমু বলে, ভাই কানে ধরছি । আর কনডম ছাড়া সেক্স করুম না ।

***********************************************************

বন্ধুরা উপরের গল্পটি কোন বানানো গল্প নয় । আমার ফেসবুক বন্ধুর সাথে ঘটে
যাওয়া ঘটনা । আমার মনে হল এই বিষয়ে সবার সচেতন হওয়া উচিত । তাই আমি আমার
বন্ধুর অনুমতি নিয়ে আমাদের ফোনে বলা কথোপকথন শেয়ার করলাম ।

এবার জেনে নিন গনোরিয়া কি আর কেমন করে গনরিয়া ছড়ায় ।

**********************************************************

গনোরিয়া কি ?

গনোরিয়া একটি যৌন রোগ ৷ এটি ছোঁয়াচে । নেসেরিয়া গনোরিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া
থেকে এই রোগ হয় ৷ পায়ুপথের উ়ষ্ণ ও ভেজা জায়গাগুলিতে এটি খুব তাড়াতাড়ি
বেড়ে ওঠে ৷ এই ব্যাকটেরিয়া মুখ, গলা, চোখ ও পায়ুতে বেড়ে উঠতে পারে সহজেই ৷

গনোরিয়া কিভাবে হয় ?

১) কোন পুরুষের গনোরিয়া আছে এমন পুরুষের সাথে সেক্স করলে এটা ছড়াতে পারে (এটা গে পেইজ তাই শুধু পুরুষ বললাম )

২) পুরুষাঙ্গ চুষার মাধ্যমে গলার ভেতরে ছড়াতে পারে ।

৩)পায়ুর মাধ্যমে এনালের মাধ্যমে গনোরিয়া ছড়াতে পারে ৷

গনোরিয়ার লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি ?

যদিও পুরুষদের ক্ষেত্রে গনোরিয়ার কোনরকম উপসর্গ নাও থাকতে পারে, তবু কিছু
পুরুষের সংক্রমণের দুই থেকে পাঁচদিন পরে লক্ষণ বা উপসর্গগুলি দেখা দিতে
পারে, আবার উপসর্গ দেখা দিতে ৩০ দিনও লেগে যেতে পারে ৷

উপসর্গ ও লক্ষণগুলির মধ্যে আছে …………

১) পেচ্ছাব করার সময় জ্বালা, বা পুরুষাঙ্গ থেকে সাদা, হলুদ অথবা সবুজ আঠালো পুঁজ বা স্রাব নির্গত হওয়া ৷

২) কোন কোন ক্ষেত্রে গনোরিয়া আক্রান্ত পুরুষদের অন্ডে ফোলা বা ব্যথা হতে পারে ৷

৩) প্রস্রাবের রাস্তায় অস্বস্তি ভাব, জ্বালাপোড়া, ঝিনঝিন ভাব করে।

৪) প্রস্রাব করার সময় কুট করে কামড় দেয়। পরবর্তী সময় প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া করা এবং কখনও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তও যেতে পারে।

৫) এ সময় লিঙ্গ, বিশেষ করে প্রস্রাবের নালি লাল হয়ে ফুলে যায় ও ব্যথা অনুভব হয়।

৬) পায়ু পথে ইনফেকশন বা ঘা হতে পারে । সমকামীরা এই রোগে গুহ্যদারে আক্রান্ত হয়।

এই রোগ হলে কি হয় ?

১) চিকিৎসা না করালে লিঙ্গ ও এর আশপাশের গ্রন্থি আক্রান্ত হয়ে ফুলে যায় এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়।

২) লিঙ্গ উত্থিত হলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।

৩) সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে প্রস্রাবের রাস্তা চিকন হয়ে প্রস্রাব ঠিকমতো বের হতে পারে না। ফলে থলিতে প্রস্রাব জমা হতে থাকে।

৪) সেক্স পাওয়ার কমে যায় ধীরে ধীরে ।

৫) শুক্রাণু উৎপাদন কমে যায় । যার ফলে পুরুষ বন্ধাত্তের সৃষ্টি হয় ।

কি করা উচিত ?

১) ঝুঁকিপূর্ণ যৌনসংসর্গ এড়িয়ে যাওয়া অথবা পারস্পরিক বোঝাপড়ায়
যৌনসংসর্গের জন্য একটিমাত্র সঙ্গী বেছে নেওয়া, যার কোন যৌনসংক্রমণ নেই ৷

২) সেক্স করার সময় অবশ্যই কনডম ব্যবহার করা ।

৩) সেক্স করার আগে ও পরে পরিস্কার পরিচ্ছুনতা বজায় রাখা ।

যদি রোগ হয়েই যায় কি করবেন ?

১) ডাক্তারের কাছে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে ।

২) রোগ ভালো না হওয়া পর্যন্ত সেক্স করা থেকে বিরত থাকতে হবে ।

Leave a Comment